Tuesday, April 9, 2013

মতামত: উপসংহার টানালাম, 'আওয়ামীলীগ সরকার বাংলাদেশে ধর্মের রাজনীতিকে মূলধারায় নিয়ে আসলো'

আমরা দুই বন্ধু দেশের পরিস্থিতি নিয়ে অনেক কথা বলার পরে সিদ্ধান্ত নেবার
মতোই উপসংহার টানালাম, 'আওয়ামীলীগ সরকার বাংলাদেশে ধর্মের রাজনীতিকে
মূলধারায় নিয়ে আসলো'।

একসময় 'জামায়াতে ইসলামী'র রাজনীতিকেই শুধু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি হিসেবে
বোঝাতো। এবং তারা যা-ই করতো তা মূলধারার জনগণ ও সমাজের কাছে কোনোই
গ্রহণযোগ্যতা পেতো না।

কিন্তু সাম্প্রতিককালে আওয়ামীলীগ সরকার জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধ ইস্যু নিয়ে
এবং একই সাথে বিরোধীদলকে কোণঠাসা করার প্রচেষ্টার নানা অংশ হিসেবে যে সকল
কৌশল ও কার্যক্রম হাত নিয়েছে তাতে মনে হচ্ছে আগামীতে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি
ফ্যাক্টর একটি ভূমিকা রাখতে পারে।

আমরা হেফাজতের ৬ এপ্রিলের সমাবেশকে এবং তাদের সাম্প্রতিক ভূমিকাকে
'জামায়াত ইঞ্জিনিয়ারড্ বা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষাকারীদের অর্থে পরিচালিত বা
বাঁচানোর জন্য পরিচালিত' যা-ই বলি না কেন এতে যারা অংশ নিয়েছে তারা সবাই
কিন্তু জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে বিচলিত বা উৎসাহিত নয়। কিন্তু 'নাস্তিক'
ইস্যু নিয়ে এবং জামায়াতের কৌশলী ভূমিকার কারণে যেভাবেই হোক না কেন যারা
বা সমাজের যে অংশ নিভৃতে আত্মমগ্ন হয়ে নিজস্ব বলয়ে জীবন যাপন করতো তারা
আজ রাজনীতিতে অংশ নিচ্ছে। এই অংশগ্রহণ আরো অন্যভাবে হলেই হয়তো সমাজের
অগ্রগতিতে তার ভূমিকা ইতিবাচক হতো। কিন্তু এই আওয়ামীলীগ সরকার তার
ক্রিয়াকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে প্রতিক্রিয়া স্বরূপ আমরা ধর্ম নিয়ে
চরমপন্থী রাজনীতির আওয়াজই আজ দেখতে পাচ্ছি।

আগামীতে এই ,মৌলবাদী আওয়াজ যদি বাড়ে তবে তার জন্য শুধু ধর্মীয়
মৌলবাদপন্থীরাই দায়ী থাকবে না বরং রাজনীতিতে যারা ফ্যানাটিসিজম বা
গোঁড়ামিবাদ-অন্ধ অনুসরণপন্থী মৌলবাদ আনতে ভূমিকা রেখেছে তারাও দায়ী
থাকবে।
এবং এদের মধ্যে আওয়ামী জোট সরকার অন্যতম। আওয়মীলীগ যে বিষবৃক্ষ বাড়ার
সুযোগ করে দিলো তার জন্য আগামীতে তাকে জবাদিহি করতে হবে।

বাড়তি বক্তব্য হিসেবে এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, সমাজের আর্থ-সামাজিক
পটভূমির কারণেই এই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের মাঝে ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট
একটি বস্তুগত বাস্তবতা। কিন্তু তার প্রাধান্য কোনোসময়েই রাজনীতির মাঠে
প্রধান হয়ে ওঠেনি। তারই ভূমিকা সামাজিকভাবেই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের মাঝে
বিরাজিত ছিলো। এবং এক ফুটকারে কেউ যদি এই ধর্মের সামাজিক প্রাধান্যকে
অস্বীকার করে নতুন সমাজ গড়তে উৎসাহী হয় তবে তাকে এর প্রতিক্রিয়ার জন্য
প্রস্তুত থাকতে হবে। এবং দেশের বিপ্লবী সংগ্রামের ইতিহাস পর্যবেক্ষণে
এটাই সবসময় প্রমাণিত হয়েছে। ধর্ম নিয়ে সঠিক অবস্থান না নেবার কারণে
'মুরতাদ' 'কাফের' 'নাস্তিক' এই শব্দসমূহই বিপ্লবীকে বা বিপ্লবী লড়াইকে
জনমানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে দিয়েছে। বিপ্লব বাধা পেয়েছে
অপ্রতিরোধ্যভাবে।

কারো মত বা চিন্তাকে অনুকরণ করলাম কিনা জানি না। তবে এর বিরুদ্ধ বা
বিপরীত মত যৌক্তিকভাবে কেউ উপস্থাপন করতে পারলে আলোচনা করতে ভালো লাগবে।

No comments:

Post a Comment

সর্বাধিক পঠিত

ইতিহাসের ভ্রান্তি থেকে বিভ্রান্তিকর শিক্ষাঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসংগ-১৯৪৭ সাল

ইতিহাসের ভ্রান্তি থেকে বিভ্রান্তিকর শিক্ষা তারিখঃ ১৬ আগস্ট, ২০১৭ ইতিহাস একটি জাতি বা জাতিসত্তা তথা জাতিসমষ্টিকে নানাভাবে প্রভাবিত কর...