Wednesday, January 9, 2013

আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের ৪ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে অর্জনের খতিয়ান




“পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবা্য়নের প্রক্রিয়ায় এ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সাতটি বিভাগ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। বান্দরবানে রুমা ও থানছি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ৮৩৮০ জন শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক শিক্ষা ও ২,২৯৯ জনকে মাতৃভাষাভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান এবং ২০ হাজার জনকে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।”(সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ৬ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘দিন বদলের ৪ বছর’ শীর্ষক বিশেষ ক্রোড়পত্র।)
আওয়ামী সরকার কর্তৃক প্রকাশিত উক্ত ২ পাতার ‘দিনবদলের ৪ বছর’এর গুণগানভিত্তিক ক্রোড়পত্রটির লীড শীরোনাম হচ্ছে, “অগ্রগতির চার বছর, ভিশন অর্জনের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা”। উল্লেখ্য আওয়ামী সরকার তাদের নির্বাচনী “ভিশন” অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ” একটি প্রযুক্তি নির্ভর মধ্য আয়ের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ” হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে।
অন্যান্য বিষয়ে সরকারের ৪ বছরের অর্জন নিয়ে এখানে আলোচনা না করে আম পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে এখানে আলোচনা করছি।
এই ৪ বছরে দিনবদলের যে খতিয়ান দেয়া হয়েছে তার মধ্যে “মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায়” পার্বত্য চট্টগ্রামকে অন্তর্ভুক্ত করার ‘সাফল্য’-কে হাস্যরসাত্মক হিসেবে অভিহিত করা যেতে পারে কিনা ভাবছি, বাকিগুলোর কথা বাদ দিলাম। বোধহয় All (animal) men are equal, but পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ দেশের সকলের চেয়ে un-equel বিধায় যা সকল দেশের জনগণ ‘স্বাভাকিভাবে পায়” তা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ পেলে “বিশেষ” হয়ে যায়।
বাকি যা অর্জন তাতে
১. পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন ‘বিশেষ উপায়ে’ সেনাশাসন জারি রয়েছে তার উল্লেখ নেই।
২. ভূমি অধিকারের কথা নেই। ভূমি কমিশন কী কাজ করছে বা করতে পেরেছে তারও কোনো উল্লেখ নেই।
৩. পার্বত্য জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদকে জগন্নাথ মার্কা বানিয়ে পার্বত্য জুম্ম জনগণকে শিক্ষা-সাংস্কৃতিক সব দিক থেকে অধঃপতনের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে সে বিষয়ে অগ্রগতির খতিয়ানও থাকলে ভালো হতো।
বাকি যে বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে তাতেতো অর্থনৈতিক ব্যতীত “রাজনৈতিক” কোনো অগ্রগতির কথা লেখাতে থাকতে দেখলাম না। বোধকরি আওয়ামীলীগ সরকার বিএনপির তৎকালীন জেনারেল জিয়াউর রহমানের “পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা অর্থনৈতিক সমস্যা” এই নীতিকেই বেশীক আঁকড়ে থাকতে পছন্দ করছেন। এই ক্ষেত্রে তাদের বাগাড়ম্বরে আপাত পার্থক্য দেখা গেলেও মূলঃত কিন্তু তারা ‘একই পথের পথিক’। বোধকরি তারা কবি জেনারেল এরশাদের থেকেও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে অধোগামীই বলেই প্রতীয়মান হয়। এরশাদ অন্তত পার্বত্য সমস্যাকে “রাজনৈতিক” বলতে পেরেছিলেন।
পার্বত্য সমস্যাকে একচুল পরিমাণ মনে করাটা বোধহয় স্বাভাবিক মনে হয়ে থাকতে পারে। তবে এই সমস্যাকে জিইযে রাখার মধ্যে বোধহয় সরকারের ভাষায় “ভিশন অর্জনের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা”র প্রচেষ্টাকে ফাঁকাবুলি হিসেবেই প্রতিষ্ঠা করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট হতে পারে।

No comments:

Post a Comment

সর্বাধিক পঠিত

ইতিহাসের ভ্রান্তি থেকে বিভ্রান্তিকর শিক্ষাঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসংগ-১৯৪৭ সাল

ইতিহাসের ভ্রান্তি থেকে বিভ্রান্তিকর শিক্ষা তারিখঃ ১৬ আগস্ট, ২০১৭ ইতিহাস একটি জাতি বা জাতিসত্তা তথা জাতিসমষ্টিকে নানাভাবে প্রভাবিত কর...